সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
এই সাক্ষাৎ রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
সৌজন্য সাক্ষাৎ নাকি রাজনৈতিক বার্তা?
গত বৃহস্পতিবার রাতে সেনাপ্রধান সস্ত্রীক খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যান।
সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন তিনি।
দায়িত্বশীল সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এই সময় তাঁদের মধ্যে একান্তে কথাবার্তা হয়েছে।
বিএনপি নেতারা এই সাক্ষাৎকে সৌজন্য হিসেবে দেখলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিষয়টি নিয়ে নানা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
সাক্ষাতে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলেননি।
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রার প্রাক্কালে এই সাক্ষাৎ
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।
আগামী সপ্তাহে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
তাঁর পরিবার ও বিএনপি নেতারা বেশ কয়েক মাস ধরে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধানের এই সাক্ষাৎ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, এই সাক্ষাৎকে নেত্রীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে সৌজন্যমূলক আলোচনা হিসেবেই দেখা উচিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান মনে করেন, সেনাপ্রধান হয়তো এই সাক্ষাতের মাধ্যমে কোনো বার্তা দিতে চেয়েছেন।
বিশেষ করে, দেশে নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে যেসব অনিশ্চয়তা রয়েছে, তা আলোচনার বিষয় হতে পারে।
তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের এই সাক্ষাৎকে কেবল সৌজন্য বলা কঠিন। কারণ, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একটি বড় ঘটনা।”
অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সাক্ষাৎ সৌজন্যমূলক হলেও এটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।
সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি
এর আগে গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে খালেদা জিয়া সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধানসহ তিন বাহিনীর প্রধানরা তাঁকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও তাঁর কুশল বিনিময় হয়।
এই ঘটনার পর থেকেই সেনাপ্রধানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সম্পর্ক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়।
নির্বাচনী পরিস্থিতির প্রভাব
বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা এখনো চরমে।
সেনাপ্রধানের এই সাক্ষাৎকে কেউ কেউ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেও ব্যাখ্যা করছেন।
দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী অনিশ্চয়তার মধ্যেই এই সাক্ষাৎ ঘটেছে।