,

শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পে ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকার চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছে।

ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়াই স্ক্রুড স্টিল পাইল (এসএসপি) ব্যবহারের শর্ত আরোপ করে দরপত্রে অবাধ প্রতিযোগিতা সংকুচিত করা হয়েছে।

অডিট আপত্তি অনুযায়ী, প্রকল্পে এই শর্ত আরোপের ফলে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিতে সক্ষম হয়।

অপ্রয়োজনীয় শর্ত বাদ না দিয়ে চুক্তি সম্পাদনের ফলে শুরু থেকেই বিপুল আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়।

অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সঠিক প্রতিযোগিতা হলে প্রকল্পটি অনেক কম খরচে বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল।

অডিটে ১৩ খাতে ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি

অডিট আপত্তিতে প্রকল্পে ১৩টি খাতে ২ হাজার ৪৩ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতির তথ্য উঠে এসেছে।

চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে কোভিড-১৯ বাবদ অতিরিক্ত বিল পরিশোধে ক্ষতি হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা।

স্পেসিফিকেশন-বহির্ভূত ইক্যুইপমেন্ট আমদানির ক্ষেত্রে বিল পরিশোধ করে ক্ষতি হয়েছে ৪০৫ কোটি টাকা।

চুক্তি অনুযায়ী সরঞ্জাম না আনলেও ভ্যাট ও শুল্ক পরিশোধ করায় ২২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এইচভিএসি সিস্টেমের পরিবর্তে এসিএমভি সিস্টেম ব্যবহারে অতিরিক্ত ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চুক্তির শর্তবহির্ভূত আর্থিক সুবিধা প্রদান করায় ক্ষতি হয়েছে কয়েকশ কোটি টাকা।

এসএসপি ব্যবহারের অনুপযুক্ততা

প্রকল্প তদারকির দায়িত্বে থাকা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এসএসপি বাংলাদেশের মাটি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়।

মেট্রোরেল প্রকল্পে স্ট্যাটিক পাইল লোড টেস্টে এসএসপি ব্যবহারের অকার্যকারিতা প্রমাণিত হয়।

এসএসপি ব্যবহারে মাটির অপ্রত্যাশিত দেবে যাওয়ার মতো ত্রুটি দেখা গেছে।

এসএসপি বাদ দেওয়ার সুপারিশ সত্ত্বেও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি।

ফলে দরপত্র প্রক্রিয়ায় আরও প্রতিযোগিতার সুযোগ সীমিত হয়ে যায়।

টেন্ডারে স্বচ্ছতার অভাব

২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করা হলেও প্রয়োজনীয় ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়নি।

দরপত্রের শর্ত পরিবর্তন করে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে চুক্তি প্রদান করা হয়েছে।

২২টি শিডিউল বিক্রি হলেও মাত্র দুটি দরপত্র জমা পড়েছে।

সিপিটিইউর সুপারিশ উপেক্ষা করে প্রতিযোগিতা সঙ্কুচিত করার কাজ চলতে থাকে।

এভাবে প্রতিযোগিতাহীন প্রক্রিয়ায় বিপুল অঙ্কের চুক্তি সম্পাদিত হয়।

আরও পড়তে পারেন