বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল ও মামলা বাণিজ্যের একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কঠোর বার্তা আসলেও তৃণমূলে অনেকেই অনিয়ন্ত্রিতভাবে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
দলের ভিতরে শাস্তি কার্যক্রম চললেও প্রভাবশালী নেতাদের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না নেওয়ায় সমালোচনা তীব্র হচ্ছে।
চাঁদাবাজি ও দখলের অভিযোগে বহিষ্কার
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল এবং মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ জমা পড়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপি এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩১ নেতাকে বহিষ্কার এবং ১ হাজার ২০৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
জেলা এবং মহানগর পর্যায়েও শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে প্রভাবশালী অনেক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরাও দ্বিধায় পড়েছেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ উঠলেও তাঁর কোনো শাস্তি হয়নি।
দখলের বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষোভ
খুলনা, বরিশাল, এবং বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা নগদ আয়ের বিভিন্ন উৎস দখলে নিয়েছেন।
খুলনার দিঘলিয়া থেকে তিন মাসে পাঁচটি মামলা হয়েছে, যেখানে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে।
বরিশালে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
বগুড়ার চারমাথা এলাকায় সরকারি জমি দখল করে বিএনপি নেতারা দোকান নির্মাণ করেছেন এবং চাঁদার টাকা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এ ছাড়া ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের জমি দখলের অভিযোগও উঠেছে।
নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের ব্যর্থতা
বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, ১৭ বছরের নির্যাতনের ক্ষোভ থেকে অনেক নেতাকর্মী অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়েছেন।
তবে প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সাধারণ কর্মীরা দ্বিধায় পড়েছেন।
বগুড়ার বিআরটিএ অফিসের এক উপসহকারী প্রকৌশলীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হলেও অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, এখন থেকে প্রতিটি অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলীয় কোন্দলে নতুন মাত্রা
বিএনপির বিভিন্ন স্তরে কোন্দলের কারণে একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ তুলছে।
বরিশাল, খুলনা এবং সিলেটে এ ধরনের ঘটনা বেশি দেখা গেছে।
নেতাকর্মীরা বলছেন, কিছু প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ চাপা পড়ে যাচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা বারবার সতর্ক বার্তা দিলেও স্থানীয় পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
তৃণমূলের নেতারা বলছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ব্যবস্থা না নিলে দলীয় শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।