চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি বেড়েছে ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল, রাসায়নিক, ভাঙা কাচ, প্লাস্টিক ও রাবার শিল্পের উপকরণ এবং বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পাকিস্তান থেকে ১৭৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে।
গত অর্থবছরের একই সময়ে এ আমদানির পরিমাণ ছিল ১৪১ মিলিয়ন ডলার।
সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচি বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রামের সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চালু হওয়ায় আমদানি বাড়ছে।
“এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং” নামের একটি জাহাজ করাচি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে সরাসরি পণ্য এনেছে।
জাহাজটি ৩৭০ কনটেইনারে প্রায় ৬,৩৩৭ টন পণ্য পরিবহন করেছে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার হওয়ায় আমদানির পরিমাণ বেড়েছে।
পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশের পণ্য করাচি বন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসছে।
সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়েও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
ভারত থেকে আমদানি কমার কারণ
অন্যদিকে, একই সময়ে ভারত থেকে আমদানি কমেছে ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারত থেকে ২,০৫২ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে।
গত অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ছিল ২,২৬৭ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার।
ভারত থেকে বাংলাদেশ মূলত যন্ত্রপাতি, ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল এবং অন্যান্য শিল্পের উপকরণ আমদানি করে।
তবে বিনিয়োগ পরিবেশ কিছুটা স্থবির হওয়ায় এ আমদানির হার কমেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহে কোনো সংকট দেখা দিলে ওষুধ খাতে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা শীতল হওয়াও আমদানিতে প্রভাব ফেলছে।
ভারতের সঙ্গে ভিসা প্রক্রিয়া এখনও স্বাভাবিক হয়নি, ফলে দুই দেশের যোগাযোগ কমেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতাও আমদানির হ্রাসে ভূমিকা রাখছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আগের তুলনায় মজবুত হচ্ছে।
দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার নিয়মিত ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
সম্প্রতি কায়রোয় ডি৮ শীর্ষ সম্মেলনে দুই দেশের প্রধানদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের বিষয়ে আলোচনা হয়।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাব দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
পাকিস্তান থেকে খাদ্যসামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিও বাড়ছে।
এছাড়া, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তান থেকে আমদানির এ প্রবৃদ্ধি বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দেশটির হাইকমিশন জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চাহিদা ও সরবরাহই ভবিষ্যতে এ সম্পর্কের মূল নিয়ামক হয়ে থাকবে।