পাওয়ার প্ল্যান্ট
,

আগামী মার্চে চালু হতে পারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর আগামী বছরের মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে পারে।

প্রথম ইউনিটের ১,২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রোসাটম এরই মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে।

কেন্দ্রের নকশা ও মানদণ্ড পূরণের পর পরীক্ষা শেষ হলেই এটি উৎপাদনে আনা হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, রূপপুর চালু হলে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সীমিত করা হতে পারে।

এতে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে জ্বালানি তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোকে বসিয়ে রাখার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।

বিদ্যুৎ চাহিদার তুলনায় সক্ষমতা দ্বিগুণ

বর্তমানে দেশের বিদ্যুতের স্থাপিত সক্ষমতা ২৭,৭৪০ মেগাওয়াট।

রূপপুরের প্রথম ইউনিট চালু হলে তা বেড়ে হবে ২৮,৯৪০ মেগাওয়াট।

কিন্তু শীতকালে দেশের বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ৯,৫০০ থেকে ১০,০০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে।

ফলে মোট সক্ষমতার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অলস অবস্থায় বসিয়ে রাখতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থায় নতুন একটি বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এলে খরচ বেড়ে যাবে।

বিপিডিবি জানায়, বর্তমানে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের সক্ষমতা ১২,৩৩৩ মেগাওয়াট এবং ফার্নেস অয়েলভিত্তিক কেন্দ্রের ৫,৮৮৫ মেগাওয়াট।

এর মধ্যে জ্বালানি সংকটের কারণে বেশিরভাগ কেন্দ্রই পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না।

রূপপুর চালু হলে কী হবে বিদ্যুৎ খাতে?

বিপিডিবি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, রূপপুর চালু হলে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পর্যায়ক্রমে অবসরে পাঠানো হবে।

কিন্তু বেইজলোড কেন্দ্রগুলোকে বসিয়ে রাখার কোনো পরিকল্পনা নেই।

রূপপুর থেকে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের তরঙ্গ বেইজলোড কেন্দ্রগুলোর তরঙ্গের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উৎপাদন খরচ বিবেচনায় রূপপুর থেকে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও সীমিত করা হতে পারে।

তবে এই সাশ্রয়ীকরণ পুরো সক্ষমতার ক্যাপাসিটি চার্জ কমাতে পারবে না বলে খাত সংশ্লিষ্টরা সতর্ক করেছেন।

বিদ্যুৎ খরচ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

রূপপুর চালু হলে বিপিডিবি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানোর দিকে জোর দিতে চায়।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত এই প্রকল্প গ্রিডে যুক্ত করলে খরচ কমার বদলে বিপিডিবির আর্থিক চাপ বাড়বে।

অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, দেশের বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণেরও বেশি।

তিনি বলেন, “সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের পন্থা নির্ধারণের জন্য গবেষণা জরুরি।”

রূপপুরের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা।

রোসাটমের দাবি, এটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদার অন্তত ১০ শতাংশ পূরণ করবে।

তবে গ্রিডে সংযুক্ত করতে গিয়ে কারিগরি ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়তে পারেন