ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ঢুকে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার সময় সহকারী হাইকমিশন ভবনের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়েছে।
কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং পুড়িয়ে দেয়। তবে এটি একই পতাকা কি না, তা নিশ্চিত নয়।
বিক্ষোভকারীরা হাইকমিশনের মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার সময় বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ভবনের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হামলার পেছনে বিক্ষোভ
ঘটনার দিন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের বিক্ষোভ চলছিল হাইকমিশন ভবনের সামনে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের প্রতিবাদে আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশ নেয় বহু মানুষ।
বিক্ষোভ শেষে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি জমা দিতে হাইকমিশন ভবনে প্রবেশ করে।
তবে তাদের জমা দেওয়ার পর হঠাৎ ভবনের বাইরে থাকা কিছু বিক্ষুব্ধ যুবক ভবনের ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়।
সংগঠনের কার্যকরী সদস্য বিকে রায় জানিয়েছেন, বাইরে কী ঘটেছে, তা তারা দেখেননি এবং ভেতরে কাউকে দেখেননি।
ভারতের নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ
হামলার ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তিকে লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।”
এছাড়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারত সরকার।
বাংলাদেশের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর ক্ষোভ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা ছিল এবং হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির বিক্ষোভকারীরা সহকারী হাইকমিশন ভবনের প্রধান গেট ভেঙে প্রবেশ করেছে।
তারা জাতীয় পতাকার খুঁটি ভেঙে ফেলেছে এবং ভবনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
বাংলাদেশ দাবি করেছে, এই ঘটনা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন, ১৯৬১-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারকে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যান্য অঞ্চলে বিক্ষোভ
আগরতলার ঘটনার পাশাপাশি ভারতের কোচবিহার ও পেট্রাপোল সীমান্তেও বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।
কোচবিহারে সনাতনী হিন্দু মঞ্চ মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়।
পেট্রাপোল সীমান্তে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সমাবেশ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে দীর্ঘমেয়াদি অবরোধের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই বিক্ষোভগুলোর কারণে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।