,

আজিমপুরে শিশু অপহরণসহ মালামাল চুরি

রাজধানীর আজিমপুরের মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের পাশের একটি বাসায় বৃহস্পতিবার রাতে এক নারী সাবলেট হিসেবে উঠেছিলেন।

আজ শুক্রবার সকালে ওই নারীর কাছে আসা কয়েকজন ব্যক্তি বাসা থেকে বিভিন্ন মালামালসহ আট মাস বয়সী কন্যাশিশুকে নিয়ে গেছেন।

নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল চুরি করে শিশুসন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাসার তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ইসরাফিল।

তবে, বাসার মালিক ফারজানা আক্তার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

এ ঘটনায় লালবাগ থানার পুলিশ জানিয়েছে, সকালে ওই বাসায় একদল লোক এসে চুরি করেছে এবং শিশুসন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।

এই ঘটনাটি ঘটেছে আজিমপুরের মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের পাশের পিলখানা এলাকায়, যেখানে লালবাগ টাওয়ারের পেছনে বাসাটি অবস্থিত।

ফারজানা আক্তার তার শিশুসন্তান ও মায়ের সঙ্গে ওই বাসায় বসবাস করতেন।

ফারজানা আক্তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন, তার এই বিষয়টি তার এক পরিচিতজন জানিয়েছেন।

বাসার তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ইসরাফিল জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে তিনি ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি আরও জানান, প্রায় পাঁচ মাস আগে ফারজানা আক্তারের স্বামী আবু জাফর বাসা ছেড়ে চলে গেছেন, যার ফলে তিনি এবং তার শিশু কন্যা বাসায় একা থাকতেন।

এছাড়া, ফারজানা আক্তারের শিশুসন্তানকে দেখাশোনার জন্য তার নানি বাসায় থাকতেন।

বৃহস্পতিবার রাতে ফারজানা আক্তার একটি নারীকে নিয়ে বাসায় ফেরেন এবং তাকে জানানো হয় যে, ওই নারী তার সাথে সাবলেট হিসেবে থাকবেন।

এরপর আজ সকাল সাতটার দিকে শিশুসন্তানের নানি বাসা থেকে চলে যান, এবং মোহাম্মদ ইসরাফিল জানেন না তিনি কোথায় গেছেন।

পরে সাড়ে আটটার দিকে কিছু লোক বাজার নিয়ে বাসায় আসেন, এবং কিছুক্ষণ পরেই তিনি ঘটনাটি শুনতে পান।

মোহাম্মদ ইসরাফিল বাসাটির ভেতরে গিয়ে কিছু আসবাব খোলা অবস্থায় দেখতে পান, তবে তিনি নিশ্চিত নন কী কী নিয়ে গেছে।

তিনি জানান, বাসার আলমারি, ওয়ার্ডরোবসহ কিছু আসবাব খোলা ছিল, তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি।

এ ঘটনায় পুলিশ থানায় যোগাযোগ করার পর, তারা ফারজানা আক্তারের কাছে সাবলেট হিসেবে উঠা ওই নারীর মোবাইল নম্বর জানতে চায়।

তবে, ফারজানা আক্তার জানান, ওই নারীর মোবাইল নম্বরও তার কাছে নেই, কারণ তাকে নিয়ে গেছেন।

ঘটনার পরেই ফারজানা আক্তারের স্বামী আবু জাফরকে বাসায় আসতে দেখা যায়, যা তদন্তকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হতে পারে।

রাত আটটার দিকে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে, তারা ফারজানা আক্তারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন।

তবে, বাসার দরজা খোলা হয়নি এবং ভেতর থেকে জানানো হয় যে, তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন না।

এরপর সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ ঘটনায় তদন্তকারী পুলিশ জানিয়েছে, তারা দ্রুত তদন্তের কাজ শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করবে।

এই ঘটনাটি এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে সবার নজর পড়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্তে তারা তৎপর রয়েছেন এবং দ্রুত এই অপরাধের রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা করবেন।

তদন্তের পর যদি কোনও নতুন তথ্য পাওয়া যায়, তবে তা জনসমক্ষে জানানো হবে।

এ ঘটনার পর, এলাকাবাসী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে এবং সবার ধারণা, এই ধরনের অপরাধ রোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা, যা সরকারের এবং প্রশাসনের ওপর চাপ তৈরি করবে।

স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশা করছে, দ্রুত অভিযুক্তদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

এ ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে, এবং ঘটনাটি ঢাকা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরে নতুন আলো ফেলেছে।

এদিকে, বাসার মালিক ফারজানা আক্তারের সেদিনের আচরণ এবং ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়ে পুলিশ আরও তদন্ত করবে।

এমনকি তার সাবলেট হিসেবে ওঠা নারীর পরিচয় ও তার আনা মালামাল নিয়ে আরও তদন্ত করা হবে।

এটি একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা, যেখানে একটি শিশুসন্তান অপহরণ ও মূল্যবান মালামাল চুরি হয়ে গেছে, এবং স্থানীয় জনগণের মাঝে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তদন্তের পর সব দিক খোলাসা হলে, বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে এবং এর পেছনে থাকা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার পর জনমনে এক ধরনের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, এবং সবার চোখ এখন পুলিশের তদন্তের দিকে।

এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সেই উদ্দেশ্যে প্রশাসন নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে।

এটি শুধু একটি চুরির ঘটনা নয়, বরং একটি পরিবার এবং শিশুদের জন্য একটি বিপদের সংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে, পুলিশের তদন্তের ফলাফল সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে, যাতে এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

আরও পড়তে পারেন