দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে।
৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ
দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে একটি পাঁচ সদস্যের টিম কাজ শুরু করেছে।
এই তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের হংকং এবং কেম্যান আইল্যান্ডের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের তথ্য পাওয়া গেছে।
এফবিআইয়ের তথ্যমতে, এই অর্থ পাচারের বিষয়টি তাদের লন্ডন প্রতিনিধি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস নিশ্চিত করেছেন।
রূপপুর প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ
শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫০০ কোটি ডলার বা প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার নির্ধারণ করা হলেও, গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটমের মাধ্যমে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ভাগনি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেন এবং পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পান।
২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে চুক্তি সইয়ের সময় শেখ হাসিনার সাথে ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক।
অন্যান্য দুর্নীতির অনুসন্ধান
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আরও আটটি প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
দুদক এই অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে একটি টিম গঠন করেছে। টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রূপপুর প্রকল্পে অর্থ লোপাটের বিষয়ে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রুল জারি করে।
যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের তথ্য
যুক্তরাষ্ট্রের জুমানা ইনভেস্টমেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে দুটি কোম্পানির মাধ্যমে শেখ হাসিনার পরিবার বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের প্রতিবেদন অনুসারে, এসব কোম্পানি চিটিং ফান্ড কোম্পানি ডেসটিনির সাথে যুক্ত থেকে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।
দুদক বলছে, এই অভিযোগগুলো বিস্তারিতভাবে তদন্ত করা হবে এবং এ বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্য পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।