,

মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াবে আইএমএফের চাপে ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশে আইএমএফের শর্তে নতুন অর্থবছরের মাঝামাঝি সময় ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে, যা আরও বেশি মূল্যস্ফীতি তৈরি করবে বলে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন।

আইএমএফের শর্তে ভ্যাট বৃদ্ধি: কী থাকছে তালিকায়?

নতুন ভ্যাট বৃদ্ধি ৬৫ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর প্রযোজ্য হবে।

এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, টিস্যু পেপার, সাবান, ফলমূল এবং এলপিজি গ্যাস।

এছাড়া মোবাইল ফোনে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার খরচের ওপরও প্রভাব পড়বে।

এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কর-জিডিপি অনুপাত দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত পূরণের জন্য, যা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার সমান।

ছোট ব্যবসার সংকট: নতুন নীতির সম্ভাব্য প্রভাব

ভ্যাটের পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্যে টার্নওভারের সীমা ৫০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ লাখ টাকায় নামানো হয়েছে।

এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ভ্যাটের আওতায় আসবেন। একই সঙ্গে ভ্যাট নিবন্ধনের সীমা ৩ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ ড. মাশরুর রিয়াজ বলছেন, “এ ধরনের পরিবর্তন ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য টিকে থাকা কঠিন করে তুলবে।”

মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় সংকটে থাকা ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলো আরও চাপে পড়বে, যা কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মোবাইল সেবা ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও ভ্যাটের বোঝা

নতুন নীতিমালায় মোবাইল ফোন সেবার সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।

ফলে মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে গ্রাহকরা মাত্র ৬৭ টাকার সেবা পাবেন।

জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

এতে এসব ওষুধের দাম বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় বাড়তি বোঝা তৈরি করবে।

মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে সতর্কতা: অর্থনীতিবিদদের পর্যবেক্ষণ

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে ১৩ শতাংশের ওপরে রয়েছে।

এ অবস্থায় ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও কমে যাবে।

পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক ড. মাশরুর রিয়াজ বলেছেন, “আইএমএফের পরামর্শে মাঝপথে ভ্যাট হার বাড়ানো সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।”

বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে চাপ সামাল দিতে পারলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এই বোঝা বহন করতে পারবে না।

সরকারকে আরও পরিকল্পিত এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

আরও পড়তে পারেন