সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেই তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পেতে হলে পূর্ববর্তী নাগরিকত্ব ত্যাগ করার নিয়ম রয়েছে। এই নিয়ম মেনে আজিজ খান তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১৯৮৮ সাল থেকেই সিঙ্গাপুরে স্থায়ী নিবাসী ছিলেন মুহাম্মদ আজিজ খান। তবে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় তাকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে পরিচিত করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রক্রিয়া
সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পেতে হলে আগের নাগরিকত্ব ত্যাগের প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. তানভীর আহমেদ বলেন, সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নেই।
তিনি জানান, নাগরিকত্ব ত্যাগের পর সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিলে নাগরিকত্বের অনুমোদন মেলে।
আজিজ খানের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফোর্বসের সাম্প্রতিক তালিকায় আজিজ খানকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তালিকায় তার সম্পদ ১১০ কোটি ডলার উল্লেখ করা হয়েছে।
সামিট গ্রুপের উত্থান ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ
১৯৭৩ সালে মাত্র ৩০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন আজিজ খান।
প্রথমে জুতা তৈরির ব্যবসা দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়।
এরপর পিভিসি আমদানি এবং চিটাগুড় রপ্তানিতে সফল হন তিনি।
১৯৯৭ সালে তিনি সামিট পাওয়ার প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সামিট পাওয়ারের বড় ভূমিকা রয়েছে।
সামিট পাওয়ার লিমিটেড বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি।
কোম্পানিটি গত দুই দশকে ব্যাপক সম্পদ বৃদ্ধি করেছে।
তবে সম্প্রতি সামিট গ্রুপ বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর গ্রুপটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
দ্বিতীয় এলএনজি টার্মিনালের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
কোম্পানির ১৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায় আজিজ খান
আজিজ খান প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালে ফোর্বসের সিঙ্গাপুরের ধনীদের তালিকায় স্থান পান।
২০২২ সালে তিনি ফোর্বসের বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায় জায়গা করে নেন।
২০২৪ সালে ফোর্বসের বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায় তার অবস্থান ২,৬৭৪তম।
আজিজ খান বর্তমানে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর মধ্যে রয়েছেন।
তার সম্পদের বড় অংশ বিদ্যুৎ, বন্দর ও ফাইবার অপটিক ব্যবসা থেকে এসেছে।
সিঙ্গাপুরে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের কারণে তিনি দেশের বাইরেও খ্যাতি অর্জন করেছেন।