বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম রিলায়েবিলিটি এবং ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের ব্যয় ৪৭.৯১ শতাংশ কমেছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
সংশোধনের পর প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে ৩০২ কোটি ১১ লাখ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্প সংশোধনের ফলে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৪০ কোটি টাকা কম ব্যয় হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঋণও ২১৮ কোটি টাকায় নেমে এসেছে, যা পূর্ববর্তী অনুমোদনের তুলনায় ২১১ কোটি টাকা কম।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রকল্পের কিছু কাজ বাদ দেয়ার কারণেই এই ব্যয় কমেছে।
মেয়াদ বাড়ানোর পরও শেষ হয়নি কাজ
২০১৭ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি চার বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
পরবর্তী সময়ে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
এত দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের বাস্তবায়ন এখনও ৭৯.৭৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি জানায়, প্রকল্পের কার্যপরিধির মধ্যে কিছু কাজ বাদ দেয়ার ফলে সময় বাড়ানো হয়েছে।
তবে পরিকল্পনা কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ করতেই হবে।
কী কাজ বাদ দেওয়া হয়েছে
প্রকল্প সংশোধনে ডিএলআর ডিভাইস ইনস্টলেশন কাজ বাদ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম আপডেটের কিছু অংশ কার্যপরিধি থেকে সরানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ অনুযায়ী কিছু দ্বৈত কাজ একীভূত করায় ব্যয় কমেছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি জানায়, বাদ দেয়া কাজগুলো বর্তমান অবস্থায় প্রয়োজনীয় ছিল না।
দেরিতে কাজ হওয়ায় বাড়ছে চাপ
বিদেশি ঋণ সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হয়।
বিলম্বিত প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে কমিটমেন্ট চার্জও বাড়ছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে অতিরিক্ত ব্যয়ের দায়ভার প্রকল্প কর্তৃপক্ষকেই নিতে হয়।
পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন বিলম্ব এড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ নজর দিতে হবে।
সংশ্লিষ্টদের মন্তব্য
প্রকল্প পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, “ক্লোজিং প্রক্রিয়ায়ও কিছু সময় লাগে। খুব শিগগিরই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে।”
তবে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাবে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা
প্রকল্প সংশোধনের বিষয়টি যাচাই করে কমিশনে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন বলেছে, আর কোনো দেরি না করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে।
বিদ্যুৎখাতে নির্ভরযোগ্যতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে।