পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে মধ্যরাতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় আদালতের এজলাস পুড়ে গেছে এবং নথিপত্র ধ্বংস হয়ে গেছে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিস্ফোরক মামলার শুনানি স্থগিত করা হয়েছে।
আদালতটি পুনর্নির্মাণ না করলে বিচার কার্যক্রম সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও অগ্নিসংযোগ
বুধবার রাতে আলিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীরা মাদরাসা মাঠে অস্থায়ী আদালত বসানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শিক্ষার্থীরা টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং আদালত সরানোর দাবি তোলে।
বিক্ষোভ চলাকালে অস্থায়ী আদালতের এজলাসে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ভোর রাতে এজলাস পুড়ে যাওয়ায় গতকাল পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিস্ফোরক মামলার শুনানি স্থগিত করতে হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, “এই আদালত এখন অকার্যকর। বিচারকাজ চালানোর জন্য নতুন স্থান নির্ধারণ করতে হবে।”
ফায়ার সার্ভিসের বাধা ও আগুন নিয়ন্ত্রণ
রাত ৩টা ১০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।
তবে, বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে তারা ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে পারেনি।
ভোর ৫টার পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে প্রবেশ করলেও এজলাস তখন পুরোপুরি পুড়ে গেছে।
পরবর্তী সময়ে ফায়ার সার্ভিস ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, “বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে আগুন নেভানোর কাজ দেরি হয়েছে।”
শাহবাগে অবরোধ ও তীব্র যানজট
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগী বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা শাহবাগে অবরোধ করেন।
গতকাল সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে বেলা ১টার দিকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
শাহবাগে অবরোধের কারণে আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টায় আন্দোলনকারীরা শাহবাগ ছেড়ে শহীদ মিনারে ফিরে যান।
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, তাদের দাবিগুলো মানা না হলে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড: মামলা ও বর্তমান অবস্থা
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়।
হত্যা মামলায় অনেক আসামি খালাস বা সাজা শেষে মুক্তি পেলেও বিস্ফোরক মামলায় ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।
গতকাল এই মামলার আসামিদের জামিন শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
এজলাস পুড়ে যাওয়ায় আগামী ১৯ জানুয়ারি নতুন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
আদালতের স্থান পরিবর্তন না হলে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।