দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান ও পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে ১০টি বিশেষ যৌথ তদন্ত দল গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই দলগুলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপের অর্থ পাচার তদন্ত করবে।
প্রতিটি দল তিন সদস্যের হবে এবং এতে থাকবে দুদক, সিআইডি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধিরা।
গত বৃহস্পতিবার দুদকের এক বিশেষ সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব অনুসন্ধান
দুদক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে-মেয়ে ও পরিবারের সাত সদস্যের ব্যাংক হিসাবের তথ্য সংগ্রহ করছে।
ব্যাংক লেনদেনের কাগজপত্র ও জমাকৃত অর্থের বিবরণ চাওয়া হয়েছে।
এর আগে আওয়ামী লীগের গবেষণা সংগঠন সিআরআই-এর তহবিল ব্যবহারের অভিযোগে তাদের নামে ব্যাংক তথ্য চাওয়া হয়েছিল।
এবার সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে তাদের হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ব্যবসায়ী গ্রুপের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তদন্ত
এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকোসহ ১০টি ব্যবসায়ী গ্রুপের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তদন্ত চলছে।
তালিকাভুক্ত এসব গ্রুপ কিভাবে ব্যাংক লুট করেছে এবং অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসব গ্রুপের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশে তাদের অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মেগা প্রকল্পের দুর্নীতি ও ব্যাংক জালিয়াতি
শেখ হাসিনার সরকারের আমলে মেগা প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
পদ্মা সেতু ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।
এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
যৌথ তদন্ত দলগুলোর কাজের পরিকল্পনা
দুদকের নেতৃত্বে গঠিত দলগুলো দেশে-বিদেশে অর্থ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করছে।
প্রতিটি দলের কাজ সমন্বয় করছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)।
আইনি সহায়তা দিচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।
পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে।
দুদকের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।