বাংলাদেশ ব্যাংক গত পাঁচ মাসে $৩.৩ বিলিয়ন বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের আগে বৈদেশিক বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল $৩.৭ বিলিয়ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এবং নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা জানান, বাকি $৪০০ মিলিয়ন আইনি জটিলতার কারণে এখনও পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর চাপের মুখে বাংলাদেশ ব্যাংক পুরো ঋণ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেয়।
রিজার্ভ বৃদ্ধির ধারা
ঋণ পরিশোধ সত্ত্বেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে $২১.৩৩ বিলিয়ন।
হুসনে আরা শিখা বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি এবং মানি লন্ডারিং কমে যাওয়া রিজার্ভ বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
তিনি আরও জানান, বিদেশি ঋণদাতারা বাংলাদেশকে নতুন ঋণ প্রদান শুরু করেছে, যা রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করবে।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় নতুন উদ্যোগ
বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে দেশের সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং উন্নত করতে সক্ষম হয়েছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রেয়াজ বলেন, রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন থামানো এবং ঋণ পরিশোধে সক্ষম হওয়া একটি বড় সাফল্য।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি বন্ধসহ কঠোর নীতিমালা গ্রহণ করেছে।
মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের কারণে রিজার্ভের ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।
রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ
২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড $১৩.৭৭ বিলিয়নে পৌঁছায়।
শুধু ডিসেম্বরেই প্রবাসীদের মাধ্যমে $২.৬৩ বিলিয়ন পাঠানো হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়কালে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল $২৭ বিলিয়ন, যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি।
ব্যাংকাররা জানান, ডলার বিনিময় হারের ঊর্ধ্বগতি এবং হুন্ডির মতো অবৈধ চ্যানেলে মানি লন্ডারিং কমে যাওয়া রেমিট্যান্স বৃদ্ধির মূল কারণ।
ডলারের চাহিদা ও বিনিময় হার
ডলারের বিনিময় হার ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে ১২০ টাকা থেকে ১২৯ টাকায় পৌঁছায়।
এই উচ্চ বিনিময় হার প্রবাসীদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করেছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডলারের হার ছিল ১১০ টাকা, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৯৯ টাকা এবং ২০২১ সালের জুলাইয়ে ৮৪.৮ টাকা।
উচ্চ বিনিময় হার হুন্ডির মতো অবৈধ মাধ্যমকে প্রতিহত করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।