সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, এবং আরও তিন সাবেক মন্ত্রী ও মেয়রকে পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত সোমবার এসব আদেশ দিয়েছেন।
পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার পর পাঁচ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
তাঁরা হলেন সালমান এফ রহমান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
মিরপুর থানায় দায়ের করা আসিফ (১৭) হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ।
আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গুলশান থানায় দায়ের করা আরেক হত্যা মামলায় হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করা হয়।
এছাড়া উত্তরা পশ্চিম থানার একটি হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
হাতিরঝিল থানার একটি হত্যা মামলায় শাজাহান খান এবং শাহবাগ থানার হত্যা মামলায় জুনাইদ আহ্মেদ পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরপরই গ্রেপ্তার
গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের জেরে সালমান এফ রহমানসহ সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১৩ আগস্ট প্রথম গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান।
পরবর্তী সময়ে হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহ্মেদ পলক, শাজাহান খান এবং আতিকুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা মামলাসহ আরও অভিযোগ রয়েছে।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ
গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয় এই পাঁচ সাবেক কর্মকর্তাকে।
সালমান এফ রহমানকে একাধিক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
হাসানুল হক ইনু এবং শাজাহান খানকেও পৃথক পৃথক সময়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, এসব মামলার তদন্তে উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে।
আদালতের সিদ্ধান্ত ও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সালমান এফ রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে দীর্ঘমেয়াদী শাস্তি হতে পারে।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং জনগণের গণআন্দোলনের চাপে আইনগত প্রক্রিয়াগুলো দ্রুততর করার ওপর জোর দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।