,

দাম বাড়িয়ে বাজারে ফিরল ‘লুকানো’ সয়াবিন তেল

কয়েক দিন আগে বাজার থেকে আচমকা উধাও হয়েছিল বোতলজাত সয়াবিন তেল।

সোমবার দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতেই দোকানে দোকানে সয়াবিন তেলের স্তুপ দেখা গেছে।

তীর, ফ্রেশ, পুষ্টি এবং বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেল দোকানগুলোতে ফের সরবরাহ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর মজুতদারির কারসাজিতেই এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল।

সরবরাহ সংকট দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা সরকারকে চাপ দিয়ে দাম বাড়ানোর সুযোগ নিয়েছে।

কারসাজির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে এই সময় ব্যবসায়ীরা ক্রেতার পকেট থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়েছে।

দাম বাড়ানোর প্রেক্ষাপট

সোমবার বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন ঘোষণা দেন, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

নতুন ঘোষণায় প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম এখন ১৭৫ টাকা।

খোলা সয়াবিন তেলের দামও লিটারে ৮ টাকা বেড়ে ১৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের চার মাসের মাথায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর এই ঘোষণা প্রথম।

এ সংকটের আগে সরকার ১৭ অক্টোবর ভোজ্যতেলের আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছিল।

১৯ নভেম্বর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট আরও ৫ শতাংশ কমানো হয়।

তবে বাজারে তেলের দাম কমার পরিবর্তে সংকট দেখা দেয়, যা কৃত্রিম বলে মনে করা হচ্ছে।

সংকট সৃষ্টির অভিযোগ: সিন্ডিকেটের ভূমিকা

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোজ্যতেলের সংকট আসলে ব্যবসায়ীদের কৌশল।

তারা সংকট সৃষ্টি করে সরকারকে দাম বাড়াতে বাধ্য করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেছেন, পুরো ভোজ্যতেল বাজার কয়েকটি বড় কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে।

এই কোম্পানিগুলো সংকট সৃষ্টি করে নিজেদের সুবিধা নিয়েছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেছেন, মজুত থাকার পরও সরবরাহ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বারবার এ ধরনের কারসাজি চালিয়ে ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের পকেট কাটছেন।

তেলের বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে ছোট ব্যবসায়ীদের বাল্ক আমদানির সুযোগ দিতে হবে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতির চাপে ক্রেতারা

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে।

তেলের দাম বৃদ্ধি ক্রেতাদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোজ্যতেল সংকটের এই কৃত্রিম নাটক দেশের বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা স্পষ্ট করেছে।

তেলের দাম বাড়ায় পরিবারের মাসিক ব্যয়ের ওপরও প্রভাব পড়বে।

এ পরিস্থিতিতে বাজার ব্যবস্থাপনায় নজরদারি এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়তে পারেন