ঢাকায় বিএনপির ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগম, দ্রুত নির্বাচনের দাবি জোরালো

গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য সরকারকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের

সাতই নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষ্যে ঢাকায় বিএনপির আয়োজিত বিশাল সমাবেশ ও র‍্যালিতে বিপুল জনসমাগম ঘটেছে। এ সমাবেশ থেকে দলটি দ্রুত নির্বাচনের দাবিকে পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।

বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সমাবেশে দলটি সরকারকে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানায়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতৃবৃন্দ সরাসরি বলেছেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ছাড়া অন্য কোনো অজুহাত মেনে নেয়া হবে না।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সরকারের উদ্দেশ্যে গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তার কথা বলেছেন, যা নতুন নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে।

দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি

সাতই নভেম্বরের সমাবেশে বিএনপির নেতারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, দ্রুত নির্বাচন আয়োজন ছাড়া অন্য কোনো পরিকল্পনা দলটি মেনে নেবে না। দলটির দাবি, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশে বলেন, বিএনপি চায় সরকার দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুক এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করুক।

বিএনপির নেতারা জানান, জনসাধারণের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। তাদের দাবি, দ্রুত নির্বাচন আয়োজন না করলে দেশে রাজনৈতিক সংকট আরও প্রকট হতে পারে।

সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে সহায়তা করতে বিএনপি প্রস্তুত। তারেক রহমানের এই বক্তব্য সরকারের প্রতি বিএনপির একটি কৌশলগত আহ্বান হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিএনপি মনে করছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে। দলের অন্যান্য নেতারা তারেক রহমানের এই বক্তব্যের সাথে সুর মিলিয়ে বলেন, সরকারকে সহযোগিতা করতে বিএনপি সবসময় প্রস্তুত।

বিশাল জনসমাগমের মাধ্যমে শক্তি প্রদর্শন

ঢাকার সমাবেশে বিপুল জনসমাগম ঘটিয়ে বিএনপি আবারও তাদের শক্তি প্রদর্শন করেছে। বিএনপির নেতারা বলেন, দেশের মানুষ তাদের পাশে রয়েছে, এবং তারা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “সাতই নভেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। জিয়াউর রহমান সেদিন গৃহযুদ্ধ থেকে দেশকে রক্ষা করে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিয়েছিলেন।”

নির্বাচন বিলম্বের আশঙ্কা

বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সরকার কোনো অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করতে পারে। যদিও সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিটি গঠন করেছে এবং নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি কাজ করছে, তারপরও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির এই বিশাল শোডাউন সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে এবং নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে প্রভাবিত করবে।

গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে সংকট

বিএনপি নেতারা বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে সংকটের উত্তরণ সম্ভব। তারা আরও বলেন, সরকার যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করে তবে জনগণ তাদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনের আগে সংলাপের মাধ্যমে সময়সীমা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

আরও পড়তে পারেন