জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্র প্রকাশের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
কিন্তু সরকার এর একদিন আগে জানায়, তারা দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি প্রকাশ করবে।
এরপর এক মাস পার হলেও এখনো এই ঘোষণাপত্রের কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়।
সরকার এখন বলছে, ঘোষণাপত্র প্রকাশে তারা শুধু ফ্যাসিলিটেট করবে।
সরকারের এই অবস্থান নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কড়া বার্তা দিয়েছেন।
তিনি সরকারের উপদেষ্টাদের জনগণের কাতারে নামার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে রাস্তায় নেমে দাবি আদায় করা হবে।”
রাজনৈতিক ঐকমত্যের অভাব
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ নিয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি।
সরকার জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক হবে।
সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, বিএনপি ও জামায়াতের কাছে খসড়া পাঠানো হয়েছে।
তবে গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এখনো এই খসড়া পায়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়।
তিনি বলেছেন, “এ বিষয়ে মতামত জানাতে সময় লাগবে।”
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক জানিয়েছেন, খসড়া পাওয়ার পরেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ছাত্র আন্দোলনের চাপ বৃদ্ধি
সরকারের দেরিতে পদক্ষেপ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “সরকার যদি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমরা রাস্তায় নামবো।”
ছাত্র নেতারা সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, “পুনরায় আন্দোলনে নামতে হলে দায়ভার সরকারেরই হবে।”
তারা দাবি করেছেন, “আগস্টের আন্দোলনের মতো এবারও ছাত্র-জনতা সফল হবে।”
এমন অবস্থায় সরকারের তরফে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার দাবি উঠছে।
সর্বদলীয় বৈঠক এবং ঘোষণাপত্রের ভবিষ্যৎ
আগামী বৃহস্পতিবার ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বদলীয় বৈঠক হবে।
সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, “এই বৈঠক থেকেই সিদ্ধান্ত হবে কবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ হবে।”
তিনি বলেছেন, “সকল পক্ষের মতামত নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে।”
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, “গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট এবং প্রত্যাশা এতে প্রতিফলিত হবে।”
তবে তিনি স্বীকার করেছেন, “এখনো অনেক ক্লজে ঐকমত্য হয়নি।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
সরকারের পক্ষ থেকে সময়মতো প্রতিশ্রুতি রক্ষা না হওয়ায় নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে।