জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ২৮ শতাংশ বেকার বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থী ও গ্রামীণ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার তুলনামূলক বেশি।
সোমবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সম্মেলনের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক অধিবেশনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী।
গবেষণা পরিচালনার জন্য দেশের ৬০৮টি কলেজ থেকে ৬১টি কলেজ বেছে নেওয়া হয়।
১ হাজার ৩৪০ জন পাস করা শিক্ষার্থী এবং ৬৭০ জন চলমান শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি হলেও কারিগরি শিক্ষা নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই হার তুলনামূলক কম।
সনদ আছে, কিন্তু মানসম্পন্ন শিক্ষা নেই
গবেষণায় দেখা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪২ দশমিক ২৯ শতাংশ বেতনভোগী চাকরি করছেন।
১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেছেন এবং ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ খণ্ডকালীন চাকরি বা আরও পড়াশোনায় ব্যস্ত।
তবে মানসম্পন্ন শিক্ষা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী চাকরি বা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে সমস্যায় পড়ছেন।
বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক কাজী ইকবাল বলেন, “সনদ পাওয়ার চেয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়া জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়িয়েছে।
বেকারত্ব কমাতে প্রয়োজন মানসম্পন্ন শিক্ষক
গবেষণা প্রতিবেদনে বেকারত্ব কমানোর জন্য কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
প্রথমত, শিক্ষার মান উন্নয়নে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ জরুরি।
দ্বিতীয়ত, শিক্ষকদের সুবিধা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে হবে।
সহশিক্ষা কার্যক্রম বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, কারিগরি শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো এবং গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের বিশেষ সহায়তা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চাকরির বাজারের বাস্তবতা
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, চাকরির বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিকূল।
এসএসসি সাধারণ ধারার শিক্ষার্থীদের তুলনায় কারিগরি বা দাখিল পাস করা শিক্ষার্থীরা বেশি কর্মসংস্থান পাচ্ছেন।
প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে মানসম্পন্ন শিক্ষা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের এগিয়ে রাখতে পারে বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।