বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
লন্ডনে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিত থেরাপি নিচ্ছেন এবং একা হাঁটার চেষ্টা করছেন।
ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে মানসিকভাবেও উজ্জীবিত হচ্ছেন তিনি।
তার চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত চিকিৎসা শুরু হবে।
লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি, থেরাপি ও একা হাঁটার প্রচেষ্টা
বেগম খালেদা জিয়া গত ৮ জানুয়ারি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন।
তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসার পরিকল্পনা করছেন।
ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আল মামুন জানিয়েছেন, থেরাপি নেয়ার পর খালেদা জিয়া কারও সাহায্য ছাড়াই হাঁটার চেষ্টা করছেন।
শনিবার ও রবিবার ক্লিনিকে পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও সোমবার থেকে পুনরায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে সব পরীক্ষা শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।
চিকিৎসক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা চলছে।
পরিবারের সান্নিধ্যে উজ্জীবিত খালেদা জিয়া
ছেলে তারেক রহমান নিয়মিত মা’র সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।
তিনি বাসায় তৈরি খাবার নিয়ে গিয়ে মায়ের খাবারের তদারকি করছেন।
তারেক রহমানের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও খালেদা জিয়ার সান্নিধ্যে রয়েছেন।
নাতনিদের সঙ্গেও সময় কাটাচ্ছেন তিনি, যা তাকে মানসিকভাবে শক্তি জোগাচ্ছে।
তারেক রহমানের মা’কে জড়িয়ে ধরার একটি আবেগঘন ছবি গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়, চিকিৎসার প্রশংসা
খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে প্রতিদিন বিএনপি’র স্থানীয় নেতাকর্মীরা লন্ডন ক্লিনিকের সামনে ভিড় করছেন।
দলের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, লন্ডনের চিকিৎসকরা বাংলাদেশের চিকিৎসার প্রশংসা করেছেন।
তারা বলেছেন, দেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, থেরাপির পর খালেদা জিয়া একা হাঁটতে পারছেন।
চিকিৎসার উন্নতি সম্পর্কে নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে।
বিদেশে যাত্রা ও অতীত চিকিৎসা ইতিহাস
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গত ৭ জানুয়ারি রাতে কাতার আমীরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান।
হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছে ছেলের গাড়িতে চড়ে সরাসরি ক্লিনিকে ভর্তি হন।
ঢাকা ত্যাগের দিন বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তার পাশে অবস্থান নিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান।
২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় সাজা পেয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন বন্দি ছিলেন।
২০২০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়, কিন্তু বিদেশ যাত্রার অনুমতি দেয়নি।
বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগতে থাকা খালেদা জিয়া ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ একাধিক জটিলতায় তাকে প্রায়ই আইসিইউতে রাখতে হয়েছে।
বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরিবারের বহু আবেদন উপেক্ষা করেছিল সরকার।